Skip to content

খতিয়ান/পর্চা অনুসন্ধান করুন সঠিক উপায়ে ২০২৪

    খতিয়ান/পর্চা হলো জমির একটি গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট যার ধাঁরা আমরা বুজতে পারি উক্ত জমি বর্তমানে এবং অতিতে কার নামে রেকর্ড ছিল বা এখন আছে, তবে বিপত্তি তখনি যখন আমরা খতিয়ান/পর্চা অনুসন্ধান করতে চাই, কারণ আমাদের দেশে একটা প্রতা চালো আছে যেটি হলো আমরা সরকারি কোন সার্ভিস নিতে হলে তা আমরা খুব সহজে পাইনা, এবং পেলেও এর জন্য অপেক্ষা করতে হয় বহুদিন, এবং বেশ কিছু টাকাও খরছ হয়। 

    আরও পড়ুনঃ ই নামজারি যাচাই

    তবে আর নয় বিভ্রান্তি কারণ এই বর্তমান সময়ে এসে আমরা অনলাইনে নিজের মোবাইল অথবা কম্পিউটার দিয়ে খতিয়ান/পর্চা অনুসন্ধান করতে পারি। কিভাবে খতিয়ান/পর্চা অনুসন্ধান করতে হয় শুরু থেকে শেষ সব কিছুই জানব আজকে। এবং উক্ত খতিয়ান/পর্চা অনুসন্ধান করার পর সেটা কিভাবে ডাউনলোড করতে হয় সেটাও জানব। 

    আরও পড়ুনঃ নাম দিয়ে জমির মালিকানা যাচাই

    মূল বিষয়ে যাওয়ার আগে আমাদের কিছু প্রাথমিক ধারণা নিতে হবে, 

    যেমনঃ অনলাইনে খতিয়ান/পর্চা অনুসন্ধান করার জন্য জমির অথবা উক্ত খতিয়ানটির যেকোন একটি তথ্য দরকার হবে, এবং এর পাশাপাশি আরও কিছু তথ্য দরকার হবে, যা আমরা বিস্তারিত জানব পরের ধাপে। 

    এবং আপনার খতিয়ান/পর্চা অনুসন্ধান করার জন্য দরকার হবে একটি মোবাইল অ্যাপ অথবা ওয়েবসাইট, বিস্তারিত জানব পরের ধাপে তার আগে চলোন দেখে নেওয়া যাক খতিয়ান/পর্চা অনুসন্ধান করার জন্য কি কি তথ্য বা ডকুমেন্ট দরকার হবে। 

    খতিয়ান/পর্চা অনুসন্ধান করতে যা যা লাগবে বিস্তারিত

    খতিয়ান/পর্চা অনুসন্ধান করার জন্য বেশ কিছু তথ্য দরকার, যেমন জমির অথবা খতিয়ান/পর্চার যেকোন একটি তথ্য প্রয়োজন, এবং জমি যেই স্থানে রয়েছে সেই স্থানের ঠিকানা। 

    জমি অথবা খতিয়ানের তথ্য

    জমির তথ্যর মধ্যে রয়েছে সেটার দাগ নাম্বার, মালিকের নাম, এবং পিতার নাম।

    খতিয়ানের তথ্যের মধ্যে রয়েছে, খতিয়ান নাম্বার, দাগ নাম্বার, মালিকের নাম, পিতা/স্বামীর নাম। 

    অর্থাৎ আপনি যদি খতিয়ান/পর্চা অনুসন্ধান করতে চান তাহলে জমির অথবা খতিয়ানের তথ্য গুলোর মধ্যে যেকোন একটি তথ্য প্রয়োজন হবে। 

    এক্ষত্রে যেমনঃ জমির দাগ নাম্বার, খতিয়ান/পর্চা নাম্বার, জমির মালিকের নাম, স্বামী অথবা পিতার নাম। 

    এর মধ্যে যেকোন একটি হলেই আপনি অনলাইনে খতিয়ান/পর্চা অনুসন্ধান করতে পারবেন। 

    জমির স্থানের ঠিকানা

    আপনি খতিয়ান/পর্চা অনলাইনে অনুসন্ধান করার জন্য অবশ্যই আপনার জমির স্থানের সঠিক ঠিকানা প্রয়োজন। জমির স্থানের ঠিকানার মধ্যে রয়েছে – মৌজা, উপজেলা, জেলা, বিভাগ। 

    আপনার খতিয়ান/পর্চা অনলাইনে অনুসন্ধান করার জন্য অবশ্যই এই চারটি ঠিকানার নাম জানা থাকতে হবে। 

    জমির স্থানের ঠিকানা প্রয়োজন, যেমনঃ জমি যেই এলাকায় আছে সেখানের মৌজা নাম, উপজেলা নাম, জেলা নাম, এবং বিভাগ নাম জানা থাকতে হবে।

    জমির খতিয়ান/পর্চা অনুসন্ধান করার পদ্ধতি

    জমির খতিয়ান/পর্চা অনুসন্ধান করার জন্য আমরা দুটি মাধ্যম ব্যাবহার করতে পারি, দুটি মাধ্যমের মধ্যে একটি রয়েছে কিছুটা সহজ এবং আরেকটি কিছুটা কঠিন।

    দুটি পদ্ধতি হলোঃ 

    • মোবাইল অ্যাপ্লিকেশান
    • ভূমি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট

    মধ্যে মোবাইল অ্যাপ্লিকেশান দিয়ে খতিয়ান/পর্চা অনুসন্ধান করা তুলনা মুলক সহজ এবং একটি অপশন বেশি পাওয়া যায়, মোবাইল অ্যাপ্লিকেশান দিয়ে খতিয়ান/পর্চা অনুসন্ধান করলে আপনি এই চারটির যেকোন একটি দিয়ে অনুসন্ধান করতে পারবেন।যেমন এই চারটি অপশন থাকবেঃ জমির দাগ নাম্বার, খতিয়ান/পর্চা নাম্বার, জমির মালিকের নাম, স্বামী অথবা পিতার নাম।

    তবে আপনি যদি ভূমি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট দিয়ে খতিয়ান/পর্চা অনুসন্ধান করেন সেক্ষেত্রে আপনি পাবেন তিনটি অপশন যেমনঃ জমির দাগ নাম্বার, খতিয়ান/পর্চা নাম্বার, জমির মালিকের নাম। 

    (স্বামী এবং পিতার নাম দিয়ে খতিয়ান অনুসন্ধান করার অপশন ওয়েবসাইটে নেই, তাই আপনি যদি স্বামী বা পিতার নাম দিয়ে খতিয়ান/পর্চা অনুসন্ধান করতে চান তাহলে আপনার জন্য শুধু মাত্র মোবাইল অ্যাপ্লিকেশান অপশনটি রয়েছে)

    মোবাইল অ্যাপ্লিকেশান দিয়ে যেহেতু সবাই যেকোন তথ্য দিয়ে খতিয়ান/পর্চা অনুসন্ধান করতে পারবে এই জন্য আমরা প্রথমে মোবাইল অ্যাপ্লিকেশান দিয়ে খতিয়ান/পর্চা অনুসন্ধান করা দেখব, 

    এরপর দেখব কিভাবে ওয়েবসাইট দিয়ে খতিয়ান/পর্চা অনুসন্ধান করতে হয়, 

    এবং একদম শেষে দেখব খতিয়ান অনুসন্ধান করার পর কিভাবে খতিয়ানটি অনলাইনে ডাউনলোড করা যায়। 

    মোবাইল অ্যাপ্লিকেশান দিয়ে খতিয়ান/পর্চা অনুসন্ধান

    মোবাইল অ্যাপ্লিকেশান দিয়ে খতিয়ান অনুসন্ধান করার পুর পদ্ধতি আমরা দেখব তিনটি ধাপে। 

    প্রথম ধাপ – অ্যাপ্লিকেশান ডাউনলোড 

    প্রথমেই আপনার মোবাইলে থাকা প্লে স্টোর থেকে উক্ত অ্যাপ্লিকেশানটি ডাউনলোড করা প্রয়োজন, এর জন্য প্লে স্টোরে গিয়ে eKhatian লিখে সার্চ করুন, অ্যাপ্লিকেশানটি প্রদর্শিত হলে ডাউনলোড করুন। 

    তারপর অ্যাপটি ওপেন করুন, প্রথমেই দেখতে পারবেন একটি অপশন আছে যেটার নাম খতিয়ান। এটাতে ক্লিক করে অপশনটির বিতরে প্রবেশ করুন। 

    দ্বিতীয় ধাপ – জমির স্থান নির্বাচন করুন

    দ্বিতীয় ধাপে জমির স্থানের ঠিকানা নির্বাচন করতে হবে, এর জন্য প্রথমে আপনার জমির বিভাগ, তারপর জেলা, তারপর খতিয়ানের ধরন, তারপর উপজেলা, তারপর মৌজা নির্বাচন করুন। 

    প্রথমে বিভাগ নির্বাচন করুন বিভাগ অপশন ক্লিক করে বাংলাদেশের সকল বিভাগের নাম দেখানো হবে বিভাগ অপশনে সেখান থেকে আপনার বিভাগ নামটি বাছাই করুন। যেমনঃ আমি সকল বিভাগ থেকে সিলেট বাছাই করলাম। 

    তারপর জেলা নির্বাচন করুন* জেলা নির্বাচন করার জন্য জেলা অপশনে ক্লিক করে সেখানে থাকা আপনার বিভাগের সকল জেলা দেখানো হবে, এখান থেকে আপনার জমির স্থান অনুযায়ী জেলা নামটির উপরে ক্লিক করে জেলা নির্বাচন করুন। 

    তারপর খতিয়ান/পর্চা ধরন বাছাই করতে হবে, এর জন্য খতিয়ানের ধরন বাটনে ছ্যাপ দিলে, বাংলাদেশে যত ভূমি সেবা খতিয়ান গুলো রয়েছে তার সবগুলো সেখানো হবে, আপনি যেই খতিয়ানটি অনুসন্ধান করতে চান সেটা এখান থেকে বাছাই করুন, বাছাই করার জন্য আপনার কাঙ্ক্ষিত খতিয়ানটির নামের উপরে ছ্যাপ দিন তাহলেই এটি নির্বাচন হয়ে যাবে। 

    তারপর একই ভাবে উপজেলা নির্বাচন করার জন্য উপজেলা অপশনে ছ্যাপ দিয়ে আপনার জমির স্থানের উপজেলা নির্বাচন করুন। 

    তারপর জমির মৌজা নির্বাচন করুন, এর জন্য মৌজা অপশনে ছ্যাপ দিন তাহলে আপনার এবং আপনার আশেপাশের সকল মৌজা দেখাবে সেখান থেকে আপনার মৌজা নামটি বাছাই করুন। 

    তৃতীয় ধাপ – জমির তথ্য সাবমিট ও অনুসন্ধান

    তৃতীয় ধাপে এসে আপনি দেখতে পাবেন চারটি অপশন রয়েছে জমির খতিয়ান/পর্চা অনুসন্ধান করার জন্য। এর মধ্যে আপনার কাছে যেই তথ্যটি রয়েছে সেই তথ্যটির মধ্যে ক্লিক করে সেটি নির্বাচন করুন। 

    অপশনটি বাছাই করার পর তার নিচেই আপনার বাছাই করা তথ্যটি লিখুন। 

    যেমনঃ আমার কাছে রয়েছে শুধু মাত্র পিতার নাম তাই আমি পিতার নাম দিয়ে খতিয়ান/পর্চা অনুসন্ধান করতে চাই। এর জন্য আমি পিতা/স্বামী অপশনটি বাছাই করলাম। তারপর নিছে একটি ফাঁকা বক্স আসলো সেখানে আমার পিতার নামটি লিখলাম। 

    এই রকম ভাবে আপনি এই চারটির মধ্যে যেকোন একটি দিয়েই খতিয়ান অনুসন্ধান করতে পারবেন। 

    তথ্য সাবমিট করা হয়ে গেলে নিছে থাকা ক্যাপছা লিখুন, তারপর অনুসন্ধান করুন বাটনে ছ্যাপ দিয়ে আপনার খতিয়ান/পর্চা অনুসন্ধান করা সম্পন্ন করুন। 

    এরপরেই দেখতে পারবেন আপনার খতিয়ানের তথ্য, এখন আপনি চাইলে আরও কিছু তথ্য সাবমিট করে উক্ত খতিয়ানটির অনলাইন কপি ডাউনলোড করতে পারবেন, অথবা ভূমি মন্ত্রনালয় সার্টিফাইড অরিজিনাল খতিয়ান কপি আপনার ঠিকানায় হোম ডেলিভারি নিতে পারবেন। 

    আরও পড়ুনঃ জমির খতিয়ান ডাউনলোড

    ওয়েবসাইটের মাধ্যমে খতিয়ান/পর্চা অনুসন্ধান

    ওয়েবসাইটের মাধ্যমে খতিয়ান অনুসন্ধান করার জন্য চলে যান একটি ওয়েবসাইটে, এর জন্য সার্চ করুন Eporcha gov bd লিখে। তারপর প্রথমে আসা ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন। 

    তারপর সেখানে দেখতে পারবেন মেনু বারে দুটি অপশন রয়েছে, একটি হলো সার্ভে খতিয়ান এবং অন্যটি হলো নামজারি খতিয়ান। আপনি যদি নামজারি খতিয়ান অনুসন্ধান করতে চান তাহলে মেনু থেকে নামজারি নির্বাচন করুন। 

    এবং যদি সার্ভে খতিয়ান অনুসন্ধান করতে চান তাহলে মেনু থেকে সার্ভে খতিয়ান অপশনটি বাছাই করুন। 

    তারপর নিছের অপশন গুলো থেকে পর্যায়ক্রমে আপনার জমির স্থান অনুযায়ী ঠিকানা নির্বাচন করুন। 

    এরপর খতিয়ানের তথ্য দিয়ে খুঁজুন বাটনে ক্লিক করে খতিয়ান অনুসন্ধান করা সম্পন্ন করুন। 

    আরও পড়ুনঃ ওয়েবসাইটের মাধ্যমে খতিয়ান অনুসন্ধান করার বিস্তারিত 

    জমির খতিয়ান ডাউনলোড ও অরিজিনাল কপি হোম ডেলিভারি

    জমির খতিয়ান ডাউনলোড করার জন্য আমাদের আরও কিছু তথ্য প্রয়োজন সেগুলো দিয়ে আমাদের একটি ফর্ম পূরণ করতে হবে। 

    জমির খতিয়ান ডাউনলোড করার জন্য দরকারঃ 

    ভোটার আইডি কার্ড অনুযায়ী তথ্য

    নাম (ইংরেজিতে)

    ভোটার আইডি কার্ড নাম্বার

    জন্ম তারিখ

    মোবাইল নাম্বার

    হোম ঠিকানা (পোষ্ট কোড সহ)

    এই তথ্য গুলো প্রয়োজন, তারপর দরকার হবে সরকার নির্ধারিত ফী। 

    অনলাইন কপি ডাউনলোড করতে ১০০ টাকা। 

    অরিজিনাল কপি ভূমি অফিচে ডেলিভারি ১০০ টাকা। 

    অরিজিনাল কপি হোম ডেলিভারি ১৪০ টাকা। 

    আরও পড়ুনঃ জমির খতিয়ান ডাউনলোড করার বিস্তারিত

    Related Post
    ই নামজারি যাচাই ও নামজারি আবেদন চেক
    ই পর্চা খতিয়ান অনুসন্ধান
    খতিয়ান ও দাগের তথ্য অনুসন্ধান
    নাম দিয়ে জমির মালিকানা যাচাই

    FAQs

    ই পর্চার আবেদন

    ই পর্চার আবেদন করে আপনারা দরকার হবে জমির দাগ নং, খতিয়ান নং, মালিকানা নাম, জমির ঠিকানা, ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য, এই গুলো দিয়ে প্রথমে ই পর্চা অনুসন্ধান করতে হবে, বিস্তারিত…

    খতিয়ান অনুসন্ধান করার পর ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য দিয়ে ই পর্চার আবেদন করতে হবে, অনলাইন কপি অথবা অরিজিনাল কপি ডাউনলোড করার জন্য, অনলাইন কপি ডাউনলোড করতে ১০০ টাকা পেমেন্ট করতে হবে এবং অরিজিনাল কপি ডেলিভারি পেতে ১৪০ টাকা পেমেন্ট করতে হবে, ই পর্চার আবেদন করতে বিস্তারিত পড়ুন…

    প্রিন্ট পর্চা কি?

    কম্পিউটারে লিখা খতিয়ানকে বলা হয় প্রিন্ট পর্চা, পর্চা অনেক ধরনের রয়েছে, এর মধ্যে অন্যতম আর এস খতিয়ান ও নামজারি খতিয়ান। এই সব খতিয়ান গুলো দুই ধরণের রয়েছে, হাঁতে লিখা এবং কম্পিউটারে লিখা। যেসকল খতিয়ান কম্পিউটারে লিখা হয়ে থাকে সেগুলোকে প্রিন্ট পর্চা বলা হয়।

    ই পর্চা কত প্রকার ও কি কি?

    ই পর্চা মোট ৮ প্রকার, এর মধ্যে ৭ প্রকার হলো সার্ভে খতিয়ান এবং অন্য একটি হলো নামজারি খতিয়ান। সার্ভে খতিয়ান ৭ প্রকার হলেও সারা দেশে এখনো সেটার ব্যাবহার শুরু হয়নি এবং সব এলাকায় ৭ প্রকারের সার্ভে খতিয়ান প্রয়োজন হয়না।

    সার্ভে খতিয়ান ৭ প্রকার কি কি?

    • বি আর এস খতিয়ান
    • বি এস খতিয়ান
    • সি এস খতিয়ান
    • আর এস খতিয়ান
    • এস এ খতিয়ান
    • দিয়ারা খতিয়ান
    • পেটি খতিয়ান

    সার্ভে খতিয়ান ৭ টি এবং নামজারি খতিয়ান একটি, মোট ই পর্চা খতিয়ান ৮ প্রকার।